চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের ফুলকুঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুক্রবার আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হয়েছে। 'আদিবাসীদের অস্তিত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে অধিকতর সামিল করুন' এ প্রতিপাদ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সম্মিলিত আদিবাসী সমাজের ব্যানারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ উপলক্ষে বেলা ১১টায় ফুলকুঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি আমনূরা- নাচোল সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক টুনু পাহানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিংগু মুরমু, ক্ষুদ্র জাতিসত্তার উন্নয়ন সংগঠন লাহান্তি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বঙ্গপাল সরদার, গোমস্তাপুর উপজেলার উঁরাও আদিবাসীদের দিঘরী পরিষদের রাজা জহরলাল এক্কা, কলেজ শিক্ষক গোবিন্দ চন্দ্র বর্মন, নাচোল পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ধিরেন চন্দ্র বর্মণ, নিয়ামতপুর উপজেলা আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অজিত মুন্ডা, আইচন পাহান সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন প্রমূখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের দপ্তর সম্পাদক নকুল পাহান।
বক্তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজের অস্তিত্ব, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ ও নাগরিক মর্যাদার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আদিবাসীরা যখন আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করছে, তখন বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে আদিবাসীরা ভয়ে এই দিবসট সবখানে উদযাপন করতে পারছে না। যখনই কোন সরকার পরিবর্তন হচ্ছে, তখনই আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তার বলি হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহীসহ বিভিন্ন জেলায় আদিবাসীদের বাড়িঘরে আগুন, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করা হচ্ছে। আমরা মনে করি, ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী এই আন্দোলন খুবই যৌক্তিক। কেননা আমরাও বৈষম্যের শিকার। ভেবেছিলাম আন্দোলনের এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে সবধরনের নিপীড়ন ও বৈষম্য দূর হবে। একটি নতুন ইতিবাচক পরিবেশ তৈরী হবে। কিন্ত বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা দারুণভাবে হতাশ। হামলা ও লুটপাট চলতে থাকলে ছাত্রজনতার এই গৌরবময় আন্দোলন কালিমালিপ্ত হবে। সবধরনের সহিংসতা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান বক্তারা।