আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Malaysian girl's marriage

ছয় বছরের প্রেম: রিয়াজের সঙ্গে মালয়েশিয়ান তরুণীর বিয়ে

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক:

প্রকাশিত: ০২ মার্চ, ২০২৪, ০৬:০২ পিএম

ছয় বছরের প্রেম: রিয়াজের সঙ্গে মালয়েশিয়ান তরুণীর বিয়ে
....সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ ছয় বছরের প্রেম শেষে লক্ষ্মীপুরের রিয়াজ উদ্দিনের সঙ্গে মালয়েশিয়ান তরুণী নূর আজিরা বিনতে আজহার বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দুই লাখ টাকা দেনমোহরে রিয়াজ তার স্বপ্নের মালয়েশিয়ান এ নারীকে বিয়ে করেছন। 

জেলা শহরের লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আবিরনগর এলাকার বরের পৈতৃক ভিটা বাড়ীতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন রিয়াজ ও আজিরা। ওই সময় এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য এবং স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। 

একই এলাকার কাজী মোহাম্মদ আলী বেলাল এ বিয়ে পড়ান। বর রিয়াজ পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের আবিনগর এলাকার সাবেক সহকারী সাব রেজিষ্ট্রার জামাল উদ্দিনের ছেলে। কনে আজিরা মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের ওলিয়া ফেছকুয়াতান ১৫ এ জালাননসি/৬ তামান ইস্তেফাক ইনজাহ, ৫৩/১ কুয়ালালামপুর এলাকার আজহা বিন হোসাইন ও নুর আসিকিন বিন আরেফিন দম্পতির মেয়ে। 

রিয়াজের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় নয় বছর আগে রিয়াজ মালয়েশিয়ায় যান। এর মধ্যে ছয় বছর আগে একদিন আজির একটি ফ্যাশন ডিজাইনের প্রতিষ্ঠানে ক্লাস করার জন্য আসে। পাশেই রিয়াজের দোকান ছিল। প্রতিষ্ঠানটির সামনে দিয়ে তিনি হেঁটে যাচ্ছিলেন। ফ্যাশন ডিজাইনের প্রতিষ্ঠানটিতে আজিরা ও তার একজন মেয়ে বন্ধু বসে ছিল। 

এক পর্যায়ে আজিরার বন্ধু রিয়াজকে ডাক দেয়। তখন তিনি গেলে আজিরার বন্ধু তাকে সুদর্শন বলে সম্বোধন করে। একই সঙ্গে রিয়াজ কোন দেশি তা জানতে চায়। রিয়াজ তাকে বাংলাদেশি বলে পরিচয় দেয়ার পরও তারা বিশ্বাস করতে পারছিলো না। 

তাদের দাবি, রিয়াজ ইরানি অথবা সৌদি বাসিন্দা। আজিরার বন্ধু রিয়াজেরও ভালো বন্ধু হয়ে উঠে। কিন্তু লাজুক প্রকৃতির হওয়ার আজিরা তার সঙ্গে কথা বলতো না। আজিরার বন্ধু একটি সমস্যায় পড়েছিল। এতে আজিরা ও তার বন্ধুর জন্য সমপরিমাণ খাবার নেয় রিয়াজ। যেহেতু আজিরার সঙ্গে রিয়াজের বন্ধুত্ব ছিল না, এতে আজিরা খাবারের বিষয় নিয়ে অবাক হয়ে পড়ে। বাংলাদেশে বিষয়টি স্বাভাবিক হলেও মালয়েশিয়ায় এটি অবাক করা ঘটনা। পরে আজিরা তার মাকে রিয়াজের সম্পর্কে জানায়। আল্লাহ সহায় হলে রিয়াজকে বিয়ে করবে বলেও মাকে জানান তিনি। 

এর দুই মাস পরে রিয়াজ ও আজিরার সঙ্গে সরাসারি ভালো লাগার কথাবার্তা আদান প্রদান হয়। কুয়ালালামপুর শহরের ইস্তেফা সেন্টার থেকে তাদের নতুন সম্পর্কের সূচনা ঘটে। সম্পর্কের প্রথম দিকেই আজিরার মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করেন রিয়াজ। প্রথমে আজিরার বাবা একটু মনোক্ষু্ণ্ণ ছিলেন। কিন্তু এখন রিয়াজের সঙ্গে তার শ্বশুর আজহার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। তাদের সম্পর্ক এখন বন্ধুর মতো। এখন এক সাথে দু`জনে ঘুরতে বের হন। রিয়াজ বিদেশি মানুষ তা আজহা বুঝতেই দেন না। 

কনে নুর আজিরা বিনতে আজহা বলেন, বাংলাদেশি মানুষ খুবই দারুণ এবং শ্রদ্ধাশীল। আমি রিয়াজকে অনেক বেশি ভালোবাসি। কারণ সে খুব ভদ্র স্বভাবের ও অনেক সুন্দর। শ্বশুর-শাশুড়ি আমাকে মেয়ের মতো গ্রহণ করেছেন। তাদের সঙ্গে চার দিন ছিলাম। আমি আমার পরিবারের মতোই তাদেরকে অনুভব করছি। 

রিয়াজ উদ্দিন বলেন, আজিরা মালয়েশিয়ায় আমাদের দেশের নামে খারাপ কিছু শুনেছে। তবে উড়োজাহাজে এক বাঙালির উপকারে সে মুগ্ধ হয়ে পড়েছে। বিমানবন্দরে তাকে সংশ্লিষ্টরা আমাদের দেশে স্বাগত জানিয়েছে। এসব বিষয়ে আজিরা খুবই খুশি। আজিরা এখন বাংলাদেশিদের সম্মান করে। আমি ১ বছর দেশে আছি। এর মধ্যে আজিরা আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকবে। তাকে একবারে দেশে আনার জন্য মালয়েশিয়ার দূতাবাসসহ বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হবে।

আজিরার সম্পর্কের রিয়াজ বলেন, আজিরার কোন ছেলে বন্ধু নেই। এজন্যই আমি তাকে বেশি ভালোবাসি। আর মালয়েশিয়াতে আমি অনেক ধরনের মেয়ে দেখেছি। কিন্তু আজিরার মতো কাউকে পাইনি। ওই দেশের মেয়েদের মধ্যে টাকা পয়সার লোভ থাকে। কিন্তু আজিরার কাছে তেমন কোন কিছুই দেখিনি। আজিরা খুব ভালো মনের অধিকারী। 

রিয়াজের বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, রিয়াজ আমার ছোট ছেলে। ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করতে চেয়েছি। কিছু জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ বিয়েতে আমরা পুরো পরিবারই আনন্দিত। আগামি শুক্রবার ছোট করে অনুষ্ঠান করা হবে। আজিরার স্বজনরা আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাগজপত্রের জটিলতার কারণে আপাতত আসতে পারবেন না।



google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0