আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

A family of Rajshahi blocked by SP's behavior

দাপুটে এসপির আচরণে অবরুদ্ধ রাজশাহীর এক পরিবার

Bijoy Bangla

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:০৪ পিএম

দাপুটে এসপির আচরণে অবরুদ্ধ রাজশাহীর এক পরিবার
দাপুটে এসপির আচরণে অবরুদ্ধ রাজশাহীর এক পরিবার, জাতীয় জরুরী সেবাতেও ‘৯৯৯’ মেলেনা পুলিশের সাড়া

রাজশাহী নগরীর বালিয়াপুকুর এলাকায় পুলিশের এক এসপির বিরুদ্ধে চুক্তিপত্র ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ফ্ল্যাট জবরদখল করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত এসপি’র নানামূখি অত্যাচার ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির মুখে এখন আবদ্ধ ভুক্তভোগী ইয়াসিন আলীর পরিবার। ওই এসপির অত্যাচারের মুখে জরুরী জাতীয় সেবা ‘৯৯৯’ এ কল দিলেও পুলিশের সাড়া মেলেনা। 

বুধবার দুপুরে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য তুলে ধরেন। লিখিত বক্তব্যে শিরোইল বালিয়াপুকুর এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন আলী বলেন, ২০২১ সালের সালের ১১ জানুয়ারি ভূমি উন্নয়ন ক্যাটাগরিতে আটতলা বিশিষ্ট একটি বহুতল ভবন নির্মাণের চুক্তি হয় নগরীর  হেঁতেম খা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী (এসপি) ও ভূমিমালিক ইয়াসিন আলীর মধ্যে। তখন তিনি পুলিশের পরিচয় গোপন রেখেছিলেন। চুক্তি মোতাবেক উভয়পক্ষ ১৪টি করে ফ্ল্যাট পাবেন বলেও বন্টন উল্লেখ করা হয়। কিন্তু নির্মাণ কাজ শেষ হবার পর এসপি আব্দুর রহিম চুক্তিনামা ভঙ্গ করে অতিরিক্ত তিনটি ফ্ল্যাট দবি করে বসেন। সে মোতাবেক তিনি মোট ১৭টি ফ্ল্যাট নেবেন বলে জানান ভূমি মালিককে। চুক্তিপত্র ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ফ্ল্যাট দখলে বাঁধা প্রদান করলে তিনি তার পদপদবীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফ্ল্যাট ক্রেতা-ভাড়াটিয়া ও ভূমিমালিকসহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের উপর চড়াও হন এবং ভয়ভীতি প্রদর্শণ করেন। তার কথা না শুনলে পুলিশ ও মিথ্যা মামলা মোকদ্দমা দিয়ে শায়েস্তা করার হুমকি ধামকি অব্যাহত রাখেন। এছাড়াওর্ নায় আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশের মাধ্যমে আমাদের দখলকৃত ফ্ল্যাটে ন্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পাঁচজন কাউন্সিলরের সমন্বয়ে গঠিত সালিশী বোর্ড গঠণ করে একটি সুষ্ঠু সমাধান করে দিলেও এসপি আব্দুর রহিম সেই সমাধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে পুলিশী ভয়ভীতি দেখিয়ে পুরো পরিবারকে হয়রানির মধ্যে রেখেছেন। 

জানা গেছে বর্তমানে আব্দুর রহিমের শাহ নামের এসপি টাঙ্গাইলে কর্মরত। তার বিরুদ্ধে রাজশাহীতে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তবে পুলিশের এসপি হওয়ায় সাধারণ মানুষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন না। রাজশাহী নগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা না প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিনি এসপি আবদুর রহিম শাহ অত্যন্ত বদমেমাজী। 

এদিকে ভুক্তভোগি পরিবার অভিযোগ করেন, আব্দুর রহিমের বেআইনী কর্মকান্ডে আমরা হতাশ ও আতংকিত। পুলিশী অপশক্তি ও বহিরাগত মাস্তান বাহিনী দিয়ে আমাদেরকে বিল্ডিং থেকে উচ্ছেদ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের আইজিপি ও রাজশাহী পুলিশ কমিশনারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

ইতিপূর্বে  ঐ একই ভবনে র মমতা নার্সিং ইন্সটিটিউট নামে প্রতিষ্ঠান টি দখল ও মুল উদ্যোক্তাদের নামে মিথ্যা  অভিযোগ ও  হয়রানি র সুদীর্ঘ  তদন্ত শেষে গত বছর জুলাই মাসে  এই এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী গুরুদন্ড প্রাপ্ত হন,  এবং তদপূর্বে  টাঙ্গাইল পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার এর এক পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে আটকিয়ে মারধরের অভিযোগে সরকার কতৃক তিরস্কৃত হন

প্রসঙ্গ, রাজশাহীতে নার্সিং পেশা নিয়ে নোংরা মন্তব্য ও প্রতিষ্ঠান তালাবন্ধ করার প্রতিবাদে মমতা নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে নগরীর দেবীসিং পাড়ায় নার্সিং ইন্সটিটিউটের সামনে নার্সিং পেশা নিয়ে নোংরা মন্তব্য ও প্রতিষ্ঠান তালাবন্ধ করার প্রতিবাদে এসপি আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরীর শাস্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আল্টিমেটাম দিয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, রাজশাহীর উন্নয়নের অন্যতম রূপকার এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন যখন নগরীকে বহুমার্তিক উন্নয়নে শিক্ষা বান্ধব নগরীতে রূপদান করছে, তখন একজন স্বার্থবাদী এসপি শিক্ষার্থীদের রাস্তায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য করছে। পুলিশ বাহিনী আজ আপনার মতো গুরুদণ্ডে দণ্ডিত কর্মকর্তাকে নিয়ে বিব্রত। এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসপি’র নোংরা কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বক্তরা।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) গভীর রাতে নগরীর দেবীসিং পাড়ায় নার্সিং ইন্সটিটিউটে মুল ফটকে তালা দেয়  বিভাগীয় সাজাপ্রাপ্ত এসপি আব্দুর রহিম শাহ এর লোকজন। পরের দিন এ নিয়ে সকালে ক্লাস করতে আসা উপস্থিত ছাত্রীদের নোংরা ও অশালীন মন্তব্য করে এসপি আবদুর রহিমের বোন ও ক্যাডাররা। এসময় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে লাঞ্ছিত করে সেখান থেকে বের করে দেয় রহিমের বোন। ঘটনার জেরে এ নিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ও শুভানুধ্যায়ীরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে ডিপ্লোমা নার্সেস স্টুডেন্ট ইউনিয়নের জেলা সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ডিপ্লোমা নার্সেস স্টুডেন্ট ইউনিয়নের ইউনিট সভাপতি সাইফ আলী, সাধারণ সম্পাদক মুশফিক, যুগ্ম সম্পাদক সামিউল মিরা ও রুপালী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0