আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, জুলাই ৭, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Renovation of 109 year old railway bridge

১০৯ বছরের পুরাতন রেল সেতু সংস্কার গতি বাড়বে ১০ এর যায়গায় ৯০ কি: মি:

Bijoy Bangla

আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী

প্রকাশিত: ০৮ জুন, ২০২৪, ০৭:১১ পিএম

১০৯ বছরের পুরাতন রেল সেতু সংস্কার গতি বাড়বে ১০ এর যায়গায় ৯০ কি: মি:
১০৯ বছরের পুরাতন রেল সেতু সংস্কার গতি বাড়বে ১০ এর যায়গায় ৯০ কি: মি:

ব্রিটিশ আমলে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের দিলপাশার রেল স্টেশনের কাছে চুন-সুরকির গাঁথুনি দিয়ে নির্মিত গার্ডার ব্রিজের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। ছয় স্প্যান বিশিষ্ট পাঁচ পিয়ারের ৩৪৮ ফুট লম্বা ব্রিজটিতে অস্থায়ী রেললাইন সরিয়ে স্থায়ী রেললাইন বসানোর মধ্য দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। শুক্রবার (৭ জুন) ভোর সাড়ে ৫টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত টানা সাড়ে ৭ ঘণ্টা রেলওয়ের দেড় শতাধিক কর্মচারী কঠোর প্ররিশ্রম করে কাজটি শেষ করেন। নির্মাণের ১০৯ বছরের মধ্যে এর আগে কখনো এই সেতুটির কোন মেরামত করা হয়নি।

পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগীয় রেলওয় সূত্র জানায়, ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বর্ষা মৌসুমের আগেই ছয় মাসের এই প্রকল্পের কাজ মাত্র ২ মাস ৮ দিনে শেষ হয়েছে। সেতুটি সংস্কার হওয়ায় এখন এই ব্রিজের ওপর দিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেসসহ ২১ জোড়া আন্তঃনগর যাত্রীবাহী ট্রেন, এক জোড়া মেইল ট্রেন এবং এক জোড়া মালবাহী ট্রেন ৯০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। 

সেতুটি অনেক পুরোনা হওয়ায় অতিরিক্ত ভারী ট্রেন চলাচলের কারণে গার্ডার ব্রিজের পিয়ার, বেডব্লক ফাঁটল ধরে। ফলে ব্রিজ অতিক্রম করার সময় ট্রেন কেঁপে উঠতো।  ২৬ নম্বর গার্ডার ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ ডেডস্টপ ঘোষণা করে। অস্থায়ী রেললাইন তৈরি করে শূন্য কিলোমিটার গতিতে ট্রেন থামিয়ে ১০ কিলোমিটার গতিতে ব্রিজের ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচল করতো।

এর আগে গত ৩১ মার্চ শত বছরের বেশি পুরোনা ওই গার্ডার ব্রিজের আরসিসি বেডব্লক ও পিয়ারগুলো সম্পূর্ণ ভেঙে জ্যাকেটিং ঢালাই করে অস্থায়ী রেললাইন তৈরি করে সংস্কার কাজ চলমান রাখা হয়।

সংস্কার কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আরটিসির প্রকৌশলী আলমগীর কবির জানান, ব্রিটিশ আমলে ইটের মধ্যে চুন-সুড়কি এবং ভাতের মাড় দিয়ে নির্মিত গার্ডার ব্রিজটি। এর ওপর দিয়ে অতিরিক্ত ভারী ট্রেন চলাচলের কারণে চুন-সুড়কির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে ছাইয়ের মতো হয়ে গিয়েছিল। ব্রিজের পায়ারে এবং বেডব্লকে ফাটল ধরেছিল। এই রেলরুটে ট্রেন চলাচল যেন বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য সিসিক্লিভ (লোহার এ্যাঙ্গেল) দিয়ে অস্থায়ী রেললাইন তৈরি করে সংস্কার কাজ চলে। প্রতিদিন দেড় শতাধিক শ্রমিক জ্যাকেটিং আরসিসি ঢালাই করে নতুন বেডব্লক (যার ওপরে রেললাইন বসানো থাকে) সংস্কার করতে ৬৮ দিন সময় লাগলো।

পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক আসাদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন, রেলপথে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ থাকবে না। ব্রিজগুলো সংস্কার করার জন্য আদেশ দিয়েছিলেন। সেই মোতাবেক রেলপথ মন্ত্রণালয় সেতুগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। পাঁচটি ব্রিজের সংস্কার কাজ শেষ। কিছু চলমান রয়েছে।

তিনি আরো জানান, ব্রিটিশ আমলে পাকশীতে পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে ‌‌‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজ’ নির্মানের পর ঈশ্বরদী-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মিত হয়েছিল। ওই রেলপথ নির্মাণকালে ৪৯টি রেলওয়ে গার্ডার ব্রিজ তৈরি করা হয়। তার মধ্যে ৪৫টি গার্ডার ব্রিজ রয়েছে। ব্রিজগুলো ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হলেও এখনো ২৫ টন এক্সেল লোড নেওয়ার ক্ষমতা ছিল। দিলপাশার গার্ডার ব্রিজটির পিয়ার, বেডব্লক ফাঁটল ধরে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। তাই ৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার করা হলো।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0