আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
logo

রাজশাহীতে ঈদকে কেন্দ্র করে ১০ কোটি টাকার সেমাই বিক্রির সম্ভাবনা

10 crore sales potential


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত:  ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৯:৪২ এএম

রাজশাহীতে ঈদকে কেন্দ্র করে ১০ কোটি টাকার সেমাই বিক্রির সম্ভাবনা

ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ততা বেড়েছে রাজশাহীর সেমাই তৈরির কারখানাগুলোতে। সেমাই তৈরিতে দিনরাত সমানতালে কাজ করছেন কারিগররা। তৈরিকৃত এসব সেমাই জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাগুলোতেও যাচ্ছে। রাজশাহী জেলায় ঈদকে কেন্দ্র করে ১০ কোটি টাকার সেমাই কেনা-বেচার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা কম।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বলছেন, রাজশাহী শহরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সেমাই কেনা-বেচার আশা করা হচ্ছে। যা বিগত বছরের তুলনায় দুই কোটি টাকা কম। আর জেলার হিসেবে কমেছে সেমাইয়ের বাজার। তারা বলছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় চাহিদা রয়েছে। তবে আর্থিক কারণে মানুষের কেনাকাটা কমেছে। সেই জায়গা থেকে চাহিদা কমায় উৎপাদনও কমিয়েছে বেকারি মালিকরা। 

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) রাজশাহীর তথ্য মতে, ২০টি কারখানায় ঈদকে সামনে রেখে সেমাই তৈরি হয়। উৎপাদিত সেমাই স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাতেও বিক্রি হয়। সেমাই তৈরির প্রায় ২০ দিনে কর্মসংস্থানের সুযোগ হয় পাঁচ শতাধিক মানুষের। ঈদের সময়ে বাড়তি আয়ে খুশি সেমাই কারিগররা। তবে কারখানাগুলোতে কারিগরদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরিতে কাজ করতে দেখা গেছে। কারখানা মালিকদের দাবি তারা সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসম্মতভাবে সেমাই তৈরি করছেন।

কারিগররা বলেন, প্রত্যেক কারখানায় ৮ থেকে ১২ জনের দল সেমাই তৈরিতে কাজ করেন। তাদের মধ্যে কেউ আটার খামির তৈরি করেন। কেউ সেমাইয়ের চাকা বানায়। কেউবা সেই চাকা নিয়ে তেলে ভাজেন। বাকি কয়েকজন সেমাই খাচিতে তোলেন অথবা প্যাকেট করেন। প্রতিটি দল প্রতিদিন প্রায় ৮ থেকে ১০ বস্তা সেমাই প্রস্তুত করতে পারেন। তবে এই কাজ বছরের সব সময় থাকে না। কেউ কেউ শুধু ঈদের মৌসুমেই সেমাই তৈরি করে থাকেন।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) নগরীর বিসিক সপুরা শিল্প নগরীর বিভিন্ন কারখানা ঘুরে কারিগরদের ব্যস্ততার চিত্র দেখা গেছে। কারিগররা রমজানের শুরুর দিকে অল্প সেমাই তৈরি করলেও ঈদ ঘনিয়ে আসায় বাড়তে থাকে ব্যস্ততা, সেই সঙ্গে উৎপাদনও। 

কারিগর স্বপন ইসলাম বলেন, সেমাই তৈরি মৌসমি কাজ। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এই কাজ হয়ে থাকে। বাকি সময় অন্য কাজ করতে হয় এই কারিগরদের। এই কাজে একেক কারিগরের মজুরি একেক রকম পেয়ে থাকেন।

কারিগর নজরুল ইসলাম বলেন, রোজা রেখে আগুনের কাছে বসে কাজ করাটা কষ্টকর হয়। ইদে সেমাই তৈরির সবধরনের কাজ তাদের কারতে হয়। যদিও বা এই কাজে আলাদা লোকও আছে। তবে তাদের মধ্যে থেকেই কাউকে না কাউকে এসব কাজ করতে হয়।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা বেকারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর বলেন, রাজশাহীতে ২০টি বেকারি সেমাই তৈরি করে। এই সেমাইগুলো জেলার বাইরেও বিক্রি করা হয়। রাজশাহী জেলায় ঈদকে কেন্দ্র করে ১০ কোটি টাকার সেমাই কেনা-বেচা হবে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা কম। বিভাগের ভেতরে সবচেয়ে বেশি বগুড়ায় সেমাই তৈরি হয়। 

তিনি বলেন, শহরে প্রায় পাঁচ কোটি টাকার সেমাই কেনা-বেচার আশা করা হচ্ছে। যা বিগত বছরের তুলনায় দুই কোটি টাকা কম। আর জেলার হিসেবে পাঁচ কোটি টাকা কম। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে। তবে আর্থিক কারণে কেনা-কাটা কমেছে। সেই জায়গা থেকে চাহিদা কমায় উৎপাদনও কমেছে।

এ বিষয়ে বিসিক রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শামীম হোসেন বলেন, রাজশাহীতে যে সেমাই তৈরি করা হয় সেগুলো জেলার চাহিদা মিটিয়ে আশপাশের জেলাগুলোতে বিক্রি করা হয়। বিসিকে রেজিস্ট্রার্ড করা কোনো সেমাই তৈরির কারখানা নেই। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান গোপনে ভাড়া দেয় সেমাই তৈরির জন্য। আর অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরির বিষয়টি আমরা দেখব।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0