আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, সোমবার, মে ২০, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Italy's 'blues' train

ডিজেল, বিদ্যুৎ ও ব্যাটারিতেও চলে ইটালির ‘ব্লুস' ট্রেন

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম

ডিজেল, বিদ্যুৎ ও ব্যাটারিতেও চলে ইটালির ‘ব্লুস' ট্রেন

ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহণ ব্যবস্থায়ও কার্বন নির্গমন এড়ানোর চাপ বাড়ছে ইটালিতে। এই চাপ নিরসনে জাপানভিত্তিক কোম্পানি হিটাচি বেশ বাস্তবসম্মত এক সমাধানসূত্র কাজে লাগাচ্ছে দেশটিতে। ইউরোপের অন্যান্য দেশেও সেই লক্ষ্যে উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

ইউরোপের আঞ্চলিক পরিবহণ ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, এখনই তা দেখার সুযোগ রয়েছে ইটালির টুস্কান অঞ্চলে। সেখানে হিটাচি কোম্পানির ব্যাটারিচালিত ‘ব্লুস' ট্রেন চালানো হচ্ছে। কোম্পানির প্রতিনিধি মার্কো সাকি বলেন, ইটালির উত্তরে হিটাচি কোম্পানির পিস্টোরিয়ার কারখানায় ব্লুস ট্রেন তৈরি করা হয়। জাপানে কোম্পানির সদর দপ্তরের সহায়তায় সেখানেই এই ট্রেন তৈরি করা হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ার মার্কো সাকি ও তার টিম করোনা মহামারির সময় এ পরিকল্পনার কাজ শুরু করেছিলেন। এখনো পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ট্রেন লাইনে নামানো হয়েছে ৷ মার্কোর মতে, ‘ব্যাটারি ও ডিজেলের মেলবন্ধনই ছিল মূল চ্যালেঞ্জ। প্রচলিত ডিজেল ট্রেন তৈরি করা তেমন কঠিন কাজ নয়। ডিজেলের পাশাপাশি ব্যাটারি চালু করে জ্বালানির ব্যবহার কমানোই ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এই প্রযুক্তিটির নাম ‘ডিসরাপটিভ' প্রযুক্তি।'

ব্লুসের প্রতিটি কামরায় দুটি করে ব্যাটারি বসানো আছে। ফলে প্রচলিত ডিজেল ট্রেনের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম জ্বালানি ব্যবহ্রত হয় ব্লুসে। ট্রেন চলার সময়েই ব্যাটারি চার্জ করা যায়। এমনকি ইলেকট্রিক গাড়ির মতো ব্রেক থেকে পাওয়া শক্তিও সেই কাজে লাগানো হয়।

লাইনের যে সব অংশে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে, সেখানে ওভারহেড তার থেকে শক্তি আসে। এখনো ডিজেল ইঞ্জিনের প্রয়োজন থাকলেও অদূর ভবিষ্যতে ট্রেন পুরোপুরি সেই জ্বালানি ছাড়াই চলবে। হিটাচি রেলের কর্মকর্তা লুকা দাকিলা বলেন, ‘সম্ভবত ২০৩০ সালে হয় পুরোপুরি ব্যাটারিচালিত, অথবা হাইব্রিড প্রযুক্তির প্রায় ৩,০০০ নতুন ট্রেন বাজারে আসবে। আমাদের কাছে হাইব্রিড সমাধানসূত্র রয়েছে। এবার আমরা বছরখানেকের মধ্যেই পুরোপুরি ব্যাটারিচালিত ট্রেন বাজারে আনবো। যে সব এলাকায় ইলেকট্রিক লাইন নেই, সেখানকার চাহিদা মেটাতে এটা এক ‘স্মার্ট'জবাব হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

বিশেষ করে টুস্কান মতো ইউরোপের গ্রামাঞ্চলে ওভারহেড ইলেকট্রিক তারের অভাব রয়েছে। রেল নেটওয়ার্কের বৈদ্যুতিকরণ বেশ ব্যয়বহুল কাজ। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে এমন উদ্যোগের আর্থিক সার্থকতা নেই।

ফ্রোরেন্স শহর থেকে প্রায় এক ঘণ্টার দূরত্বে বর্জো সান লোরেন্সো নামের টুস্কান ছোট গ্রাম অবস্থিত।সেখানকার বেশিরভাগ ট্রেন বিকট শব্দ ও পরিবেশ দূষণ করে। কিন্তু কয়েক মাস আগে নতুন ট্রেনগুলি স্টেশনে ঢোকা ও বের হওয়ার সময় ডিজেল ইঞ্জিন বন্ধ করে দিচ্ছে।

এই ট্রেনগুলি যে আরো পরিবেশবান্ধব, তা টুস্কানের লোকজনও জানেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গত বছরের শরৎ কালেই সেই অঞ্চলে বিশাল বন্যা দেখা গেছে। শহরটির বাসিন্দা লুকা দাকিলা বলেন, ‘আমাদের মতে, দূষণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন কমাতে মাঝারি মেয়াদে ব্যাটারিই সেরা উপায়।

আমরা জানি, আমাদের প্রতিযোগীরা অন্যান্য সমাধানসূত্রের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছে। আমরা খুশিমনে পাল্লা দিতে প্রস্তুত।হাইড্রোজেনের মতো কিছু সমাধানসূত্র নিয়ে আমরা জাপানে পরীক্ষার পর্যায়ে রয়েছি।’

ব্যাটারির সুবিধা হলো, প্রচলিত ট্রেনেই সেগুলি বসানো যায়৷ ইন্টারসিটি ট্রেনগুলি অদূর ভবিষ্যতেই ব্যাটারি ব্যবহার করতে চলেছে। সেটা উড়ালের বিকল্পও বটে।

শুধু টুস্কান অঞ্চলে হিটাচি কোম্পানিই নয়, জার্মানির সিমেন্স এবং ফ্রান্সের আলস্তোম এই নতুন প্রযুক্তি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে৷ গোটা ইউরোপে এমন ধরনের ট্রেন দেখতে বেশিকাল অপেক্ষা করতে হবে না।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0