আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, রবিবার, এপ্রিল ২৮, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

34 patients died in Rajshahi hospital in one day

ইন্টার্নদের ধর্মঘটের মধ্যে রাজশাহী হাসপাতালে ৩৪ রোগীর মৃত্যু

Bijoy Bangla

নিজস্ব প্রতিবেদক:

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ, ২০২৪, ০৬:৩৬ পিএম

ইন্টার্নদের ধর্মঘটের মধ্যে রাজশাহী হাসপাতালে ৩৪ রোগীর মৃত্যু
ইন্টার্নদের ধর্মঘটের মধ্যে রাজশাহী হাসপাতালে একদিনে ৩৪ রোগীর মৃত্যু

 ইন্টার্নদের ধর্মঘটের মধ্যে চিকিৎসক না পেয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাহমুদুল ইসলাম নামের ডায়রিয়া আক্রান্ত ওই রোগী মারা যান। উন্নত চিকিৎসা নিতে পাবনা থেকে তিনি এ হাসপাতালে এসে ১৭ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। ওয়ার্ডে ভিতরে জায়গা না পেয়ে তাকে রাখা হয়েছিল বারান্দার মেঝেতে।

মারা যাওয়া মাহমুদুলের মা নুরুন্নাহার জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন। তখন চিকিৎসক ছিলেন না। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসক আসার কিছুক্ষণ পর তার ছেলে মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ১২ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও কোন চিকিৎসক তাকে দেখেনি। এ কারণে তার ছেলে মারা গেছে বলে দাবি করেন তিনি।

ভাতা বৃদ্ধি ও কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা কর্মবিরতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও চলছে। এতে চার দিন ধরে উত্তরবঙ্গের বৃহৎ এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

এমবিবিএস শেষ করে রামেক হাসপাতালে ২১০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে ইন্টার্নশিপ করছেন। এ ছাড়া আগেই এমবিবিএস শেষ করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশ না করা আরও প্রায় ৬০ চিকিৎসক এফসিপিএস ও এমডিএমএস কোর্স করছেন। তাঁরা সবাই গত রোববার থেকে কর্মবিরতিতে আছেন।

তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা না থাকলেও অন্য চিকিৎসকেরা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে হাসপাতালের চিকিৎসা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছেন। কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার রহিমাপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের পুত্রবধূ রোকসানা বেগম জানান, তার শ্বশুর স্ট্রোক করেছেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এই হাসপাতালে এনেছি। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তাকে কোনো চিকিৎসক দেখেননি।

তিনি বলেন, পাশেই দুজন রোগী মারা গেলেন শুধু সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে। এখানে ফেলে রেখে তাদের রোগীর শুধু শুধু ক্ষতি করা হচ্ছে। তাদের হয়তো এখন প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে হবে।

২০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি রোগির স্বজন লিপি রানী বলেন, তার রোগীকে ডায়ালাইসিস করাতে হবে। মঙ্গলবার কী বাজে অবস্থা গেল। আমাদের পাশ থেকে একজন রোগী মারা গেল শুধু ডাক্তার না পেয়ে।

চিকিৎসক না পেয়ে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এফ এম শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘এসব অভিযোগ ঠিক নয়। আমাদের মিড লেভেলের ডাক্তাররা রাত ও দিন পরিশ্রম করছেন। এত বড় হাসপাতাল, রোগী তো মারা যাবেই। আমাদের তো রোগীর কাছে যাওয়ার সময় দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ হাসাপাতালে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১ হাজার ২০০ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি ছিল ২ হাজার ৪৯৮ জন। এ দিন নতুন ভর্তি হন ৭৯০ রোগী। এর মধ্যে মারা যান ৩৪ জন। এ হাসপাতালে রোগীর সুস্থতার হার ৯৮ শতাংশ। মারা যায় ২ শতাংশের কম। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ জনের মৃত্যু স্বাভাবিক’ বলেন হাসপাতালের পরিচালক।

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0