আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Why is the US avoiding BNP?

এখন যুক্তরাষ্ট্র কেন বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে?

Bijoy Bangla

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৪ জানুয়ারী, ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

এখন যুক্তরাষ্ট্র কেন বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে?
যুক্তরাষ্ট্র কেন বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে?

নির্বাচনের আগেও বিএনপির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের গভীর সম্পর্ক ছিল। মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রায় বিএনপি নেতাদেরকে ডেকে পাঠাতেন আমেরিকান ক্লাবে অথবা তার নিজ বাসভবনে। তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতেন। মার্কিন দূতাবাসে বিএনপির নেতাদের যাতায়াত ছিল একটি রুটিন কর্মসূচি। শুধু তাই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সমস্ত কূটনীতিকরা ঢাকা এসেছিলেন, বিভিন্ন সময়ে তারাও ঢাকায় বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনেও বিএনপির এক ধরনের প্রভাব বলয় তৈরি হয়েছিল লবিস্টদের মাধ্যমে। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের স্থানীয় নেতারা সিনেটর কংগ্রেসম্যানদের সাথে হরহামেশাই বৈঠক করতেন। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। এখন নির্বাচন হয়ে গেছে। নির্বাচনের পর বিএনপিকে একরকম এড়িয়েই চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। 

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস ১১ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর বিএনপির কোনো নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন এরকম আনুষ্ঠানিক খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় বিএনপির লবিস্টরা খুব একটা কার্যকারিতা দেখাতে পারছেন না। ওয়াশিংটনে অবস্থানরত বিএনপির নেতারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে খুব একটা সাক্ষাৎ করতে পারছেন না। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের আশীর্বাদ বিএনপির জন্য এখন এক দূর লোকের তারার মতো হয়ে গেছে। বিএনপি যাদের আশায় নির্বাচন বর্জন করেছিল এবং যারা হস্তক্ষেপ করবে প্রত্যাশায় নিজেদেরকে সব কিছু থেকে গুটিয়ে নিয়েছিল তারাই এখন বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এই মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কারণ কী? এই নিয়ে চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা কল্পনা। বিএনপিকে এক সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিচ্ছে এমন একটি ধারণা প্রবর্তিত হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই বিএনপিকেই যুক্তরাষ্ট্র এড়িয়ে চলছে। বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কারণটা কী? 

কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পিছনে পাঁচটি কারণ রয়েছে। 

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ইস্যু: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আগামী নভেম্বরে একটি নতুন নির্বাচনের মুখোমুখি দাঁড়াচ্ছে। সেখানকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফিরে আসার জোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ব্যতিব্যস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের মতো অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মনোযোগ দেওয়ার আর সময় পাচ্ছেন না। এটি প্রধান কারণ যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। 

২. বৈশ্বিক পরিস্থিতি: একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলা সব কিছু নিয়ে বিশ্ব একটা টালমাটাল অবস্থায় এবং সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা বিভিন্ন কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের দিকে কম নজর দিতে হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের। 

৩. বিএনপির সন্ত্রাস এবং সহিংস তৎপরতা: অনেকেই মনে করেন, ২৮ অক্টোবরে ঘটনা এবং তার পর থেকে নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত ট্রেনে হামলা, বাসে অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি ঘটনায় বিএনপির কিছু না কিছু যোগসাজশ আছে এমন প্রমাণ পাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব উদ্যোগে যে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করেছে তাতে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের সঙ্গে এই সমস্ত সহিংসতার সংশ্লিষ্ট রয়েছে। আর এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতিগত অবস্থানের বিরুদ্ধে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চায়, সহিংসতা চায় না। আর তাই বিএনপির প্রতি তারা কিছুটা হলেও বিরক্ত।

৪. সংলাপে না যাওয়া: বিএনপিকে সংলাপে যাওয়ার ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পরামর্শ দিয়েছিল। বিশেষ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ডোনাল্ড লু'র বার্তা মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিএনপি সেখানে ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করত, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া উচিত এবং একটি সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার জায়গায় পৌঁছানোর চেষ্টা করা উচিত। কিন্তু বিএনপি তা করেনি। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি অপমানজনক বলে অনেকে মনে করেন। আর এ কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বিএনপিকে এড়িয়ে যাচ্ছে।

৫. তারেক জিয়ার নেতৃত্বতৃত্ব: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে সব সময় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ধারা অব্যাহত রাখার জন্য দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করছে, বিএনপিতে ন্যূনতম গণতন্ত্র নেই। লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়াই বিএনপির সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আর এটি এক ধরনের এক দলীয় এবং কৃতত্ববাদী দল পরিচালনা বলে মনে করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: বাংলা ইনসাইডার

google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0