পবিত্র রমজান মাসে ইফতার ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ এর অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে খাবার বিতরণ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি আবাসিক হল কর্তৃপক্ষ। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে সরবরাহ করা এ বিশেষ খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী।
রবিবার (৩১ মার্চ) বিকেল সোয়া ৪ টার দিকে এ খাবার বিতরণ করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হলের প্রাইভেট ফেসবুক গ্রুপ 'মাস্টারদা সূর্যসেন হল পরিবার' নিজেদের এ সমস্যার কথা জানিয়ে সমালোচনা করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এই খাবার খেয়ে সারারাত পেট ব্যাথা করেছে, অধিকাংশেরই ফুড পয়জনিং হয়েছে। এই খাবার খেয়ে অনেকে পরে সেহরিতে খাবারও খেতে পারেনি। মোস্তফা কামাল রিংকু নামের এক শিক্ষার্থীকে হসপিটালেও নিতে হয়েছে।
তানভীর হাসান আতিক গ্রুপ পোস্টে লিখেন, আমাদের হলের নববর্ষের যে খাবার দিয়েছিল সেটা খেয়ে আমাদের অধিকাংশের অবস্থা খারাপ। আমার ব্যাচ এর ১৫-২০ জন এবং আমার জুনিয়রদেরও একই অবস্থা। এক-দুই জন হলে মানা যেতে কিন্তু এত জন একসাথে? নিম্নমানের রসদ খাবারে ব্যবহারের ফলেই এই অবস্থা হয়েছে আমার ধারণা। রোজা রেখে যে কষ্ট’টা আমরা পাচ্ছি এটারও হিসাব দিতে হবে।
মোজাম্মেল হোসাইন পারভেজ নামের আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, হল কর্তৃপক্ষের গতকালকের এই খাবার খেয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে! রোজাদার শিক্ষার্থীদের জন্য যা খুবই দুর্বিষহ ও উদ্বেগের! ছাত্র প্রতিনিধি এবং হল কর্তৃপক্ষের অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নেয়া ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত!
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমি শুনেছি একজনের পেট খারাপ হওয়ায় হসপিটালে গিয়েছে কিন্তু অর্ধশত শিক্ষার্থীর পেট খারাপ হয়েছে তা শুনিনি। আমার ১৮ জন হাউজ টিউটর এই খাবার খেয়েছে তাদেরতো কোনো সমস্যা হয়নি। আমি নিজেও বাসায় এই খাবার খেয়েছি কোনো সমস্যা হয়নি।
শিক্ষার্থীরা অনেকে দুই-তিনটা করে খাবার নিয়েছে পরে খাওয়ার জন্য। তাদেরতো কোনো ফ্রিজ নেই, তাছাড়া নেক্সাসে ভোররাতে খাবার বন্ধ ছিল। আমার মনে হয় তারা খাবারটি ভোররাতে খেয়েছে এজন্য সমস্যা হয়েছে। আবার গরমের জন্যও এমন হতে পারে। হলে শিক্ষার্থীরা চারটা গ্রুপে বিভক্ত আছে তাদের নিজেদের মধ্যে কোনো কনফ্লিক্ট আছে কি না সেটাও একটা বিষয়।
রান্নার সময় ও খাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রান্নাটা সারারাত ধরেই হয়। আমার হাউজ টিউটররা সারারাত ধরে সেখানে পাহারা দেয়। সকালে রান্না করে পরে ১২ টার দিকে শেষ হয়। এরপর প্যাকেট করে সোয়া ৪ টার দিকে খাবার ডিস্ট্রিবিউশন হয়।
খাবারের ব্যাপারে আমি শতভাগ নিশ্চিত। আমি পরিচিত বাবুর্চি দিয়ে রান্না করিয়েছি সবকিছুই পরিমাণ মতো ছিল।