আর্কাইভ কনভাটার ঢাকা, মঙ্গলবার, মে ২১, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Logo

Pilgrimage festival of Mother Mary

নবাই বটতলা গ্রামে মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব

গোদাগাড়ীর নবাই বটতলা মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব

নানা আয়োজন ও কর্মসূচীর মধ্যে দিয়ে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর নবাই বটতলা গ্রামে পালিত হলো মা মারীয়ার তীর্থ উৎসব। মঙ্গলবার দিনব্যাপি নবাই বটতলা মিশনে এই মহা তীর্থ উৎসবের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি স্বরূপ ৯ দিন ব্যাপী নভেনা ও খ্রীষ্টযাগ করা হয়

সকাল থেকেই অনেক ভক্তবিশ্বাসীগণ দলে দলে তীর্থ স্থানে আসতে শুরু করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় খ্রীষ্টভক্তদের নিয়ে শোভাযাত্রা করা হয় ও আরাধনা করা হয়। পরে সকাল  ১০টায় পর্বীয় খ্রীষ্টযাগ শুরু হয়। পবিত্র খ্রীষ্টযাগ উৎসর্গ করেন কার্ডিনাল বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও ও বিশপ জের্ভাস রোজারিও। 

কার্ডিনাল অর্চ বিশপ প্যাট্রিক ডি রোজারিও তাঁর উপদেশ সহভাগিতায় বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে এই নবাইবটতলার ভক্তবিশ্বাসীগণ রক্ষা পেয়েছিলেন। নবাইবটতলার এই তীর্থ খ্রীষ্টধর্মের প্রতেক্যের জন্য আশির্বাদের কারণ মা মারিয়া তাদের সব সময় সাহায্য করেন বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করেন বলে জানান তিনি।


তিনি বলেন, মানত, আবেদন, শক্তির জন্য আমরা এখানে আসি । এটি একটি আধ্যাত্মিক অনুভূতি।  ঈশ্বরের কাছে তোমাদের চিৎকার ও আর্তনাদ সেই কথা শুনেই ঈশ্বর তোমাদের কথা শুনেছেন ও আশীর্বাদ করছেন। 

আমাদের প্রত্যেকের নতুন একটি পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই এই তীর্থে আমরা এসে নিজেদের পাপ স্বীকারের মাধ্যমে নিজেদের নতুন ভাবে আবিস্কার করি। আর এই তীর্থ যাত্রায় আমরা পবিত্র হই বিধায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছায় এখানে আসি নিজেদের নতুন ভাবে আবিষ্কার করার জন্য ।

সবার প্রতি তার আহ্বান মায়ের প্রতি যেন আমরা আরও বেশি বিশ্বাসী হই এবং রোজারি মালা প্রার্থনা করি, যেন ঈশ্বরের কৃপা ও আশির্বাদ আমরা মায়ের মধ্যস্থতায় লাভ করতে পারি। তিনি বলেন, যে আমাদের আত্মার পরিত্রানের জন্য মা মারিয়ার মদ্ধস্থতায় ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে হবে ।

তীর্থস্থান দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্রীস্টবিশ্বাসী উপস্থিত হয়েছেন। কেউ এসেছেন তার মনোবাসনা পূরণ হয়েছে তাই মা মারিয়াকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপহার সামগ্রী ও মানত দিচ্ছেন আবার কেউ মানত রাখছেন পরিবার, ব্যক্তি সমাজ বা কোনো হারিয়ে যাওয়া জিনিস খুঁজে পেতে এবং অসুস্থতা থেকে সুস্থতা লাভের আশায়।  


উল্লেখ্য ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী এই গ্রামে প্রবেশ করলে এই গ্রামে থাকা মুক্তিযোদ্ধা, আদিবাসী, আশ্রিত পরিবার ও বেশ কিছু গ্রামবাসীদের ধরে নিয়ে যায়। তাদের ধরে নিয়ে গেলে এই গ্রামের খ্রিষ্টান সম্প্রদায় তখনই মা মেরীর গীর্জায় তাদের প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে প্রার্থনা করতে থাকেন। হঠাৎ করে বিকট শব্দে পাকিস্তানী সৈন্য ও দোসররা ধরে নিয়ে যাওয়া সকলকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

গ্রামের খ্রীষ্টান ধর্মের অনুসারীরা বিশ্বাস করেন তাদের অনুরোধে আশ্চর্যজনকভাবে সেদিন রক্ষাকারিণী কুমারী মারিয়ার মধ্যস্থতায় পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে তারা সবাই রক্ষা পান। এই বিশ্বাস থেকে প্রতি বছর ১৬ জানুয়ারী এই দিনটি স্মরণ করে আসষে খ্রীষ্টান ধর্মের অনুসারীরা। সেখানে আগত ভক্তরা এটাই বিশ্বাস করে প্রতিবছর এখানে আসেন প্রার্থনা ও দান খয়রাত করেন


google.com, pub-6631631227104834, DIRECT, f08c47fec0942fa0