বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিন আজ। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে সকাল ১১টায় দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে মেলার গেট। তবে এখনো মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে বসানো হয়নি ডাস্টবিন। নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থানও। ফলে যত্রতত্র পড়ে আছে ময়লা আবর্জনা। কুকুর সেসব ময়লা মুখে নিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে পুরো প্রাঙ্গণে। আর বইমেলায় আসা পাঠক দর্শনার্থীদের এসব ময়লা আবর্জনার সামনে বসেই বিশ্রাম নিতে হচ্ছে!
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বইমেলার বাংলায় একাডেমি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণের দুই অংশ মিলিয়ে হাতেগোনা ৫-৬টি ছোট ময়লার ঝুড়ি রয়েছে। আর উচ্ছিষ্ট বা ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য নির্ধারিত করে দেওয়া হয়নি নির্দিষ্ট কোনো স্থান। যার ফলে যত্রতত্র খাবারের উচ্ছিষ্ট, কফির মগ এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। এতে নষ্ট হচ্ছে বইমেলার পরিবেশ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাঠক-দর্শনার্থীরাও। আবার মেলার বেশ কয়েকটি জায়গা এখনো গুছাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখনো চলছে মসজিদ, খাবারের দোকান নির্মাণের কাজ। পড়ে আছে নির্মাণসামগ্রী এবং বালু। উদ্যানের লেকের পাশের বসার জায়গাগুলোর সামনে আছে খাবারের প্যাকেট, ওয়ান টাইম প্লেট, কফি মগ, পচা ভাত। কিছু স্টলের সামনেও ময়লা আবর্জনাও পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেকের পাশের বসার জায়গাগুলোতে সপরিবারে বিশ্রাম নিতে দেখা যায় রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে। তাদের বসার জায়গার সামনেই পড়ে আছে পচা ভাত, ওয়ান টাইম প্লেট।
তিনি বলেন, জায়গা না পেয়ে বাধ্য হয়ে এখানে বসেছি। কিছু করার নেই। বিষয়গুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত। এত বড় একটা আয়োজন অথচ ময়লা ফেলার জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। কর্তৃপক্ষের তদারকি নেই। মেলায় আগত মানুষজনের সুবিধা তৈরি করতে পারলে সবাই মেলায় আসতে উৎসাহবোধ করবে। তা না হলে মানুষজন মুখ ফিরিয়ে নেবে।
নাইমা মিতু নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখলাম ময়লা আবর্জনা পড়ে আছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিত। একটি আয়োজন পুরোপুরিভাবে সফল করার জন্য শুরু থেকেই চেষ্টা থাকতে হয়। আমরা প্রত্যাশা করব বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান প্রকাশকরাও। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন প্রকাশক বলেন, যত্রতত্র বিরানির প্যাকেট খাবারের উচ্ছিষ্ট পড়ে আছে। এগুলো কুকুর মুখে নিয়ে পুরো প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমন পরিবেশের কারণে আমরা মুষ্টিমেয় কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব সমাধান করা প্রয়োজন।
তবে দ্রুতই এসব সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, মেলায় অনেক কাজ। আমরা আশা করছি, আগামীকাল থেকেই ডাস্টবিন থাকবে। এরই মধ্যে ডাস্টবিন আনতে পাঠিয়েছি।
কট/বি