বিদেশের মাটিতে ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে কেন নৃশংসভাবে খুন করা হলো, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি গোয়েন্দাসংস্থা। যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে আভাস মিলেছে, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে রয়েছে স্বর্ণ চোরাচালানের ২০০ কোটি টাকা নিয়ে দ্বন্দ্ব। এ ছাড়া সীমান্তকেন্দ্রিক চোরাচালানের রুট নিয়ন্ত্রণও খুনের আরেক কারণ হিসেবে কাজ করেছে। খুনের মাস্টারমাইন্ড নিহত এমপি আনারের ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীনকে গ্রেপ্তার করা গেলে এ বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে বলছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিবির সূত্র বলছে, নিহত এমপি আনার ও তাকে খুনে অভিযুক্ত মাস্টারমাইন্ড আক্তারুজ্জামান শাহীন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাদের এই বন্ধুত্ব এবং দুজন মিলে সীমান্ত এলাকার কারবার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রকাশ্যই ছিল। তবে সীমান্তে চোরাচালানের পথঘাট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তাদের বন্ধুত্বে কয়েক মাস আগে ফাটল ধরেছিল।
কেন বন্ধুত্বে ফাটল ধরেছিল দুজনের, সে প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, শাহীন দুবাই থেকে স্বর্ণের চালান পাঠাতেন দেশে। সেই চালান সীমান্ত পার করার বিষয়টি দেখভাল করতেন এমপি আনার। এ জন্য তিনি নিতেন মোটা কমিশন। এই কমিশন বাড়ানো নিয়ে বছরখানেক ধরে তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। ডিবি সূত্রের দাবি, কমিশন না বাড়ায় বন্ধু শাহীনের ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এমপি আনার। এর জেরে দুবাই থেকে আসা স্বর্ণের একাধিক চালান তিনি গায়েব করেন। যার মূল্য অন্তত ২০০ কোটি টাকা। এর জেরেই দুজনের দূরত্ব বাড়ে। শাহীন অন্য মাধ্যমে স্বর্ণ পাচারের চেষ্টা করলেও তাতে বাধ সাজেন এমপি আনার। এর জের ধরেই তাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়। যার নিষ্ঠুর বাস্তবায়ন হয় কলকাতায় ভাড়া করা ফ্ল্যাটে।